আন্তর্জাতিক মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল
১৬ শাওওয়াল শরীফ ১৪৪৫ হিজরী

৩০শে সেপ্টেম্বর ২০০৮, মঙ্গলবার যেদিন সউদী আরব ঈদ পালন করেছে, চাঁদের প্রকৃত হিসাবে তা ছিল ২৯শে রমাদ্বান। সউদী সরকার ২৮শে রমাদ্বানের দিন চাঁদ দেখার মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ২৯ এবং ৩০শে রমাদ্বানের দু’টি রোযা নষ্ট করে রমাদ্বান শরীফ-এ ঈদ পালন করেছে। -সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম (ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফ)

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ২৯শে সেপ্টেম্বর তো নয়ই, ৩০শে সেপ্টেম্বররেও সউদী আরবে চাঁদ দৃশ্যমান হয়নি। এ তথ্য সে দেশের সাধারণ জনগণের পাশাপাশি বাদশা আব্দুল আজিজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্ট্রোনমি বিভাগের একজন এস্ট্রোনমার মারফতেও জানা যায়। এ ছাড়াও জানা যায় সউদী আরবের মক্কা শরীফ-এ ৬টা ১২ মিনিটে যখন মাগরিবের ওয়াক্ত হয় তার ঠিক ১০ মিনিট পর অর্থাৎ ৬টা ২২ মিনিটে চাঁদ দেখার ঘোষণা দেয়া হয়। অথচ ২৯ দিনের চাঁদ কখনো অস্ত যাবার ১০ মিনিটের মধ্যে দেখা যায় না। (যদিও সেদিন ছিল চাঁদের প্রকৃত হিসাবে সউদী আরবে ২৮শে রমাদ্বানের সন্ধ্যা)। এই ১০ মিনিটে চাঁদ দেখে চাঁদের ঘোষণা দেয়ায় জনমনে অনেক সংশয় দেখা দিয়েছে।

কিছু প্রশ্ন
১। অমাবস্যার দিন কখনো চাঁদ দেখা যায় না। তবে কি সউদী আরবের জন্য চাঁদ আলাদা নিয়মে চলে?
২। যারা চাঁদ দেখতে পেয়েছেন তাদের চোখের জ্যোতিতে কি অমাবস্যাতেও চাঁদ খুঁজে পাওয়া যায়?
৩। যারা চাঁদ দেখার খবর পরিবেশন করেছেন চাঁদ দেখা কমিটি কি তার সত্যতা নিরূপণ করতেও কোন সময় ব্যয় করেনি?
৪। জাতীয় প্রচার মাধ্যমে খবর প্রচার করতে যে সময়টুকু ব্যয় করার কথা ছিল তাও ব্যয় হয়নি তবে কি তা পূর্বেই প্রস্তুত ছিল?
৫। ১০ মিনিটে সংবাদ পরিবেশন করেও কেন সউদী প্রেস এজেন্সীর মাধ্যমে বলা হয়, “১৪২৯ হিজরী সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার ঘোষণা দেরিতে সম্পাদন হয়”। এটা কি লোক দেখানো কাজ নয়?
৬। আর যদি চাঁদ দেখার খবর পূর্বেই প্রস্তুত থাকে তবে এই চাঁদ দেখার আয়োজনের যে প্রহসন হয়েছে তার নেপথ্য কারণ কি?

সউদী প্রেস এজেন্সীর শাওয়াল মাসের চাঁদের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সউদী সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল চাক্ষুষ চাঁদ দেখার খবর এবং উম্মুল কুরার ক্যালেন্ডারের ভিত্তিতে পহেলা শাওওয়ালের তারিখ ঘোষণা করে। অথচ সেদিন যে চাঁদ দেখা যাবার কোন সম্ভাবনাই ছিল না সে বিষয়টি আমরা উল্লেখ করেছি। সউদী জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মিথ্যাচারিতার আরেকটি প্রমাণ হল তারা উম্মুল কুরার ক্যালেন্ডার অনুযায়ীও তারিখ ঘোষণা করেনি। যদিও তাদের উম্মুল কুরার ক্যালেন্ডারের সব তথ্য সঠিক নয়। বরং অনেক ক্ষেত্রেই মনগড়া তথ্য রয়েছে। উম্মুল কুরার ক্যালেন্ডারে পহেলা শাওওয়ালের তারিখ উল্লেখ আছে পহেলা অক্টোবর।

তাহলে দেখা যাচ্ছে তাদের রচিত উম্মুল কুরার ক্যালেন্ডারও তারা অনুসরণ করেনি। একটি মুসলিম দেশের সর্বচ্চ পর্যায় থেকে এমনি সব মিথ্যা তথ্য জাতীয় প্রচার মাধ্যমে উপস্থাপন করার পর পৃথিবীর প্রায় ৩০০ কোটি মুসলমানের মাঝে তাদের বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সউদী প্রেস এজেন্সীর শাওওয়াল মাসের চাঁদের রিপোর্টে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের নামের সাথে দুই পবিত্র মসজিদের খিদমতগার সউদী বাদশার নামও জড়িত হয়ে আছে। তিনি কি এ বিষয়ে দায়িত্ব এড়াতে পারবেন?

সউদী সরকারের মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণে সে দেশসহ যে সকল দেশ তাদের অনুসরণ করেছে সে সকল দেশের মুসলমানগণের আমল নষ্টের ফলে যে গুনাহর বোঝা হয়েছে তার দায়ভার কে বহন করবেন? যদি তা সম্ভব না হয় তবে এখনই খালিছ ইস্তেগফার করতে হবে। প্রকৃত মুসলমান হতে হবে এবং মিথ্যা থেকে বেঁচে থাকতে হবে। ফিরআউন এবং নমরুদের মসনদ যেহেতু চিরস্থায়ী হয়নি আগামীতে অনেকেরই মসনদ এমনি হারিয়ে যাবে। তখন শুধু অনুতাপ ছাড়া আর কোন পথ খোলা থাকবে না।