আন্তর্জাতিক মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল
১৪ শাওওয়াল শরীফ ১৪৪৫ হিজরী

মনগড়া পদ্ধতিতে আরবী মাস গণনা করা হারাম। ঊনত্রিশতম দিনে খালি চোখে চাঁদ তালাশ করা শরীয়তের নির্দেশ। অথচ চাঁদ না দেখে সউদী আরব তাদের মনগড়া নিয়মে আরবী মাসের তারিখ গণনা করে যাচ্ছে
-সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম (ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফ)

সউদী আরবের ‘উম্মুল কুরা’ তাদের আরবী মাসের ক্যালেন্ডার রচনার দায়িত্বে নিয়োজিত। কিন্তু আরবী মাস শুরু করার জন্য মাসের ঊনত্রিশতম দিনের সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ দেখার কোন চেষ্টা ‘উম্মুল কুরা’ করে না। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ইসলাম দরদী এই দেশটি চাঁদ না দেখে তাদের মনগড়া নিয়মে আরবী মাসের তারিখ গণনা করে যাচ্ছে। তাদের বানানো একটি নিয়মে প্রতিটি আরবী মাস শুরু হয়। তাদের পদ্ধতিতে অমাবস্যার দিন যদি সূর্য অস্ত যাবার পরে চাঁদ অস্ত যায় এবং সূর্যাস্তের পূর্বে অমাবস্যা সংঘটিত হয় তবে পরের দিনটি আরবী মাসের প্রথম তারিখ। কিন্তু আরবী মাস শুরু করার তাদের এই বানানো পদ্ধতিতে দেখা গেছে বেশি সংখ্যক মাস অতিবাহিত হয় যেদিন চাঁদ দেখা যায় না। শুধু তাই নয়, চাঁদ দেখা যাবার আকৃতিতেও আসে না। আবার অনেক সময় এই নিয়মে চাঁদ দেখা যাবার আকৃতিতে এলেও মেঘের কারণে চাঁদ দেখা না গেলেও পরের দিন থেকে তারা নতুন মাসের প্রথম তারিখ ঘোষণা করে। যদিও শরীয়তে আকাশ মেঘলা থাকলে মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ করার নির্দেশ রয়েছে কিন্তু সউদী সরকারের কাছে শরীয়তের নির্দেশের চেয়ে তাদের বানানো পদ্ধতির অনুসরণই লক্ষ্য করা যায়।

(নাউযুবিল্লাহ) সউদী সরকার আরবী মাসের তারিখ ঘোষণাতে শরীয়তের নির্দেশের পরিবর্তে অনেকগুলো মনগড়া নিয়ম মেনে চলে। যেমন

১। সউদী সরকার শাবান, রমাদ্বান, যিলহজ্জ মাস ব্যতীত চাঁদ দেখার চেষ্টা করে না।
২। শরীয়তের নির্দেশের অনুসরণ না করে তাদের বানানো পদ্ধতির অনুসরণ করে আরবী মাসের তারিখ ঘোষণা করে।
৩। কোন মাসে চাঁদ দেখা যাবার আকৃতিতে এলেও যদি মেঘের কারণে চাঁদ দেখা নাও যায় কিন্তু তাদের পদ্ধতি অনুযায়ী পরের দিন মাস শুরুর নিয়ম থাকলে তারা তাদের নিয়মেরই অনুসরণ করে।
৪। যে তিনটি মাসের ঊনত্রিশতম দিনে চাঁদ দেখার দাবি করে প্রায়শই সেদিনগুলোতে বাস্তবে দেখা যায় না।
৫। মাসের তারিখ ঘোষণার ক্ষেত্রে তারা মিথ্যা সাক্ষ্য গ্রহণ করে।
৬। সউদী আরবের ছয়টি প্রদেশে ছয়টি চাঁদ দেখা কমিটি থাকলেও তাদের চাঁদ দেখার রিপোর্টকে উপেক্ষা করা হয়।
৭। কখনো কোনো মাসের প্রথম তারিখ ঘোষণা করলেও পরে পুনরায় তারিখ পরিবর্তন করে।
৮। সউদী সরকার তাদের ভুল পদ্ধতির কারণে মাঝে মাঝে কোন কোন আরবী মাস ৩১ দিনে পূর্ণ করে।

সউদী আরবে ১৪২৯ হিজরীর জুমাদাল উখরা মাস সঠিক তারিখে শুরু হলেও শরীয়তের কোন নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। উম্মুল কুরা তাদের মনগড়া নিয়মে জুমাদাল উখরা মাসের যে তারিখ ঘোষণা করেছিলো সে তারিখ অনুযায়ীই তারা শুরু করেছে। কিন্তু আরবী মাস শুরু করার এ সকল বানানো পদ্ধতি সম্পূর্ণ শরীয়ত বহির্ভূত। এ পদ্ধতি চলতে থাকলে সউদী আরবে মুসলমানদের রমাদ্বান, শাওয়াল ও হজ্জ ইত্যাদি মাসের আমলগুলো যেভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকবে। বিশ্বের দুইশ’ কোটি মুসলমানের উচিত এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া এবং সউদী সরকারের এহেন কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ করা।