আন্তর্জাতিক মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল
৯ শাওওয়াল শরীফ ১৪৪৫ হিজরী

দর্শকঃ যারা বলে পৃথিবীর কোথাও চাঁদ দেখা গেলে তা সাড়া পৃথিবীর জন্য প্রযোজ্য, এ ব্যপারে আপনি কি বলেন?

চাঁদ গবেষকঃ ১) প্রথমেই বলতে হয় চাঁদ দেখা অনুযায়ী আরবী মাস শুরুর ব্যাপারে আমরা যা কিছু জেনেছি বা শিখেছি তা কিন্তু পবিত্র কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ থেকে। কেও কি কোন আয়াত শরীফ, হাদীস শরীফ বা ইজমা-কিয়াসের বর্ণনা দেখাতে পারবে যেখানে স্পস্ট লেখা আছে “যে কোথাও চাঁদ দেখা গেলে তা সাড়া পৃথিবীর জন্য প্রযোজ্য হবে?” উত্তর হচ্ছে স্পস্ট না। কোথাও তা লেখা নেই।

২) দ্বিতীয়ত আমরা জানি পবিত্র কুরআন শরীফ এমনভাবেই নাজিল হয়েছে যা ভবিষ্যতে কোন নতুন প্রেক্ষাপট আসলেও পবিত্র কুরআন শরীফ এবং হাদিস শরীফ দিয়ে তা ব্যখ্যা করা সম্ভব। কিন্তু এটা কি সম্ভব যে আয়াত শরীফ নাযিলের সময় কোন নাযিলের প্রেক্ষাপট ছিলনা কিন্তু এখন আছে? না, এটাও একেবারে অবাস্তব।

তাহলে সে সময় টেলিফোনের যুগ ছিলনা, মোবাইলের যুগ ছিলনা, পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে তথ্য পৌঁছানোর কোন সুযোগ ছিলনা। তাহলে সে সময় কিভাবে কোথাও চাঁদ দেখা গেলে তা সারা পৃথিবীর জন্য প্রযোজ্য হত?

৩) আবার ধরা যাক সামোয়াতে ( যা বাংলাদেশের পূর্বে অবস্থিত) চাঁদ দেখা গেলো। সেখানে কোন মুসলমান নেই। সামোয়ার পশ্চিমে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে যখন অনেক পরে সন্ধ্যা হোল তখন চাঁদ দেখা যায়নি। এখন বাংলাদেশকে যদি সামোয়ার দেখা অনুযায়ী মাস শুরু করতে হয় তবে কাফিরের দেখা অনুযায়ী বাংলাদেশ কি মাস শুরু করতে পারবে ? তাকি কি শরীয়তে গ্রহনযোগ্য হবে? উত্তর হচ্ছে , না হবে না । তাহলে পৃথিবীর কোথাও দেখা গেলেই তা কি করে সমস্ত পৃথিবীর জন্য প্রযোজ্য হয়।

৪) আমরা যখন বলি পৃথিবীর কোথাও সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যায় তখন অন্য প্রান্তে সকাল, তাহলে একই সাথে কিভাবে মাস শুরু করবে বা ঈদ পালন বা রোজা শুরু করবে? তখন তারা বলে যেখানে সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা গেল তারা তাদের দেশে পরের দিন সকালে ঈদ পালন করবে আর তখন যে দেশে সকাল তারা তাদের দেশে দিন শেষে সন্ধ্যায় চাঁদ দেখুক বা না দেখুক তাদের দেশে পরের দিন সকালে ঈদ পালন করবে।কিন্তু আসলে সম্মানিত শরীয়ত তা বলেন না। সম্মানিত শরীয়ত বলেন কেউ যদি কোন সন্ধ্যায় চাঁদ দেখতে না পায় তবে মাস ত্রিশ দিন গুনে আরবী মাস শুরু করবে, ঈদ বা রোজা শুরু করবে। ফলে জোর করে এই মত চাপিয়ে দেবার কোন সুযোগ নেই যে কোথাও চাঁদ দেখা গেলেই তা সাড়া পৃথিবীর জন্য প্রযোজ্য হবে।

দর্শকঃ এগুলোতো আপনার ব্যাখ্যা। ওরা কি বলে।

চাঁদ গবেষকঃ ওরা বিভিন্ন হাদিস শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে প্রমান করতে চায় যে কোথাও চাঁদ দেখা গেলেই সারা পৃথিবীতে একদিনে ঈদ পালন করা সম্ভব। আর প্রকৃত সত্য হচ্ছে যে, পৃথিবীর কোথাও চাঁদ দেখা না গেলেও সউদী ইহুদী ওহাবী সরকার ঈদ পালন করেছে, মাস শুরু করেছে। এ বিষয়ে ভুরি ভুরি প্রমান আমাদের হাতে আছে । প্রতারকদের কোন যুক্তির প্রয়োজন হয়না।