আন্তর্জাতিক মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল
১৫ শাওওয়াল শরীফ ১৪৪৫ হিজরী

দর্শক: বাংলাদেশে যেমন ‘মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল (আন্তর্জাতিক)’ নামক চাঁদ দেখা কমিটি এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চাঁদ দেখা কমিটি রয়েছে, সউদীতে কি সেরকম চাঁদ দেখা কমিটি নেই?

চাঁদ গবেষক: বাংলাদেশে আছে সরকারী আর বেসরকারী মিলিয়ে দুটি। কিন্তু সউদীতে শুধু সরকারী পর্যায়েই আছে ছয়টি কমিটি। পবিত্র মক্কা শরীফ, রিয়াদ, কাসিম, হাইল, তাবুক এবং আসির প্রদেশে রয়েছে ৬টি চাঁদ দেখা কমিটি। এই কমিটির প্রতিটিতে রয়েছে একজন কাজী, একজন মহাকাশ বিজ্ঞানী, একজন সিটি কাউন্সিলের সদস্য এবং একজন সাধারণ পর্যবেক্ষক।

দর্শক: আপনি কি বলতে চান তারপরেও সউদী সরকার চাঁদ না দেখে মাস গণনা করে? এটা কি কেউ বিশ্বাস করবে?

চাঁদ গবেষক: আপনাকে বিশ্বাস করানোর জন্য আমার বিজ্ঞানভিত্তিক উত্তর দেয়া প্রয়োজন। কিন্তু মানুষ বিজ্ঞানও বোঝে না বলে কিছু তাত্ত্বিক কথা বলছি শুনুন।

মানুষের কাছে পবিত্র ওহী মুবারক উনার মাধ্যমে ইলম যখন আসেনি তখন প্রকৃতির মধ্যে বড় কিছু দেখলেই তার উপাসনা করতো। এইভাবে চাঁদ, সূর্য, বড় বট গাছ, ইত্যাদিকে পুজা করতো। মানুষের আবেগ মনে করে, এগুলোর ক্ষমতা আছে। কিন্তু যুক্তি বলে এদের কোন ক্ষমতা নেই।

এখন সউদীতে পবিত্র মক্কা শরীফ রয়েছে, পবিত্র মদীনা শরীফ রয়েছে। ওরা আরবীতে কথা বলে, নামায-কালামও পড়ে; তাই আবেগ বলছে ওরা ভুল করতে পারেনা।

কিন্তু যখন সম্মানিত শরীয়ত এবং মহাকাশ বিজ্ঞানের আলোকে তাকাবেন তখন ধরা পরবে সউদী শাসকগোষ্ঠী জনগণের সাথে প্রতারনা করছে। যেমন, অমাবস্যার দিন চাঁদ দৃশ্যমান হয়না। কিন্তু যদি কেউ বলে চাঁদ দেখা গিয়েছে তাহলে আপনি কি ভাববেন? অবশ্যই তা হবে মিথ্যা প্রচারণা।

আবার সূর্য ডোবার আগেই চাঁদ ডুবে গেছে; তারপরেও কেউ যদি বলে- চাঁদ দেখা গিয়েছে তাহলে আপনি কি ভাববেন? অবশ্যই তাও হবে মিথ্যা প্রচারণা। সউদি সরকারের ক্ষেত্রে এরকম ঘটনা ঘটছে অহরহ।

এবার আসুন, সউদী সরকারের চাঁদ দেখা কমিটির কথা। সউদি সরকার যেদিন ১৪২৭ হিজরি সনের রমাদ্বান শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখার ঘোষণা দেয়, সেদিন সূর্য অস্ত যাবার পূর্বেই চাঁদ অস্ত যায় এবং সউদী সরকারের ৬টি চাঁদ দেখা কমিটিও চাঁদ দেখতে পায়নি। কিন্তু সউদী জাস্টিস ডিপার্টমেণ্টের কাছে এসে একজন সাক্ষী মিথ্যা ঘোষণা দেয় যে, সে চাঁদ দেখেছে। পরে সেই সাক্ষীর ভাষ্য অনুযায়ী সউদী সরকার পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস শুরুর ঘোষণা দেয়া হয় কিন্তু সেই সাক্ষিকে কোনভাবেই মিডিয়ার কারো সাথে কথা বলতে দেয়া হয়নি।

দর্শক: এ রকম হলে সাধারণ মানুষ কী করবে? মানুষতো আর অতটা তলিয়ে দেখবে না।

চাঁদ গবেষক: ঠিক আছে! কিন্তু জানার পর এখন থেকে সচেতন হতে হবে। বিশেষ মাসগুলোতে সাধারণ মানুষেরও চাঁদ তালাশ করা প্রয়োজন। আর চাঁদ না দেখা গেলে সরকারী মনগড়া সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রতিবাদ করা আরো বেশী প্রয়োজন।