আন্তর্জাতিক মাজলিসু রুইয়াতিল হিলাল
১৮ রবীউছ ছানী শরীফ ১৪৪৬ হিজরী

সারাবিশ্বে যারা একই দিনে রোযা-ঈদসহ অন্যান্য ইবাদত পালন করার কথা বলে তাদের কথা সম্পূর্ণ ভুল। ভূগোলের সামান্যতম জ্ঞানও তাদের নেই। -সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম (ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফ)

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখ, চাঁদ দেখে ইফতার (ঈদ) কর।’ রমযান শরীফ-এর চাঁদ দেখা ওয়াজিবে ক্বিফায়া।
কাজেই কিছু সংখ্যক লোক দেখলেই সকলের জন্যে রোযা ফরয হয়ে যাবে। চাঁদ দেখা গেলেই রোযা ফরয হবে, চাঁদ দেখা না গেলে রোযা ফরয হবে না। সুতরাং সারাবিশ্বে একই দিনে রোযা ও ঈদ সম্পূর্ণ ভুল সিন্ধান্ত।

সারাবিশ্বে যারা একদিনে রোযা রাখা এবং একদিনে ঈদ করার কথা বলে থাকে, সামান্যতম ভৌগোলিক জ্ঞানও তাদের নেই। কেননা, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের সময়ের পার্থক্য হচ্ছে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা। পৃথিবীর এক প্রান্তে যখন দিন, তখন অন্য প্রান্তে পূর্ব বা পরের দিন অথবা রাত। কাজেই সেখানে তখন চাঁদ দেখার প্রশ্নই আসে না। তাহলে কি করে একদিনে সারাবিশ্বে রোযা রাখা বা ঈদ করা যেতে পারে? এটা মূলতঃ নেহায়েত অজ্ঞতা ও জিহালতপূর্ণ কথা।

তারা হানাফী মাযহাব এর ইমাম, ইমামে আ’যম হযরত আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উদয়স্থলের পার্থক্য সংক্রান্ত ক্বওল না বুঝার কারণে বিভ্রান্তিতে পতিত হয়েছে। সেটা হচ্ছে “হানাফীদের নিকট একই উদয়স্থলের পার্থক্য গ্রহণযোগ্য নয়।” একই উদয়স্থলের সীমা রেখা হচ্ছে ৪৮০-৫০০ মাইলের মধ্যে। এর মধ্যে যারা চাঁদ দেখবে তাদের রোযা রাখতে হবে। আর যারা এর বাইরে থাকবে কিন্তু চাঁদ দেখবে না, তাদেরকে রোযা রাখতে হবে না। এটাই হচ্ছে উদয়স্থলের পার্থক্যের মূল কথা। একই উদয়স্থলের মধ্যে যারা চাঁদ দেখবে তাদের সকলের জন্যে একই হুকুম হবে।

কিন্তু শাফিয়ী মাযহাব মতে প্রত্যেক শহরে আলাদা আলাদা চাঁদ দেখতে হবে। এটা আমাদের হানাফী মাযহাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এমন যদি হয় যে, আলাদা উদয়স্থলে একদিনে এক দেশের পর আরেক দেশ পর্যায়ক্রমে চাঁদ দেখতে থাকে তাহলে সে সব দেশে একদিনে রোযা এবং ঈদ করতে পারবে। কিন্তু যেহেতু ভৌগোলিক কারণে পৃথিবীর এক প্রান্তের সাথে আরেক প্রান্তের ১২-১৪ ঘণ্টা সময়ের পার্থক্য রয়েছে, সেহেতু সারাবিশ্বে একদিনে রোযা এবং ঈদ পালন করা আদৌ সম্ভব নয়।

হাদীছ শরীফ-এ রোযা ও ঈদের অনেক ফযীলতের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ইহুদী-নাছারাদের যোগসাজশে একটি মহল মুসলমানদের রমযান শরীফ এবং ঈদের ফযীলত থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এটা মুসলমানদের ঈমান, আমল ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত করার এক আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। এ থেকে সকলকে সাবধান থাকতে হবে।